আঠার’শ পনের সালের জুন মাসের একটা রাত। জায়গাটা, সুইজারল্যান্ডের জেনেভা লেইক। একটা ঘরোয়া আড্ডায় উপস্থিত তিনজন পুরুষ ও একজন তরুণী। একজন একটা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন হঠাৎ। চারজন একটা করে গল্প লিখবে, গল্পটা হবে ভৌতিক। লেখার পর সবাই ভোট করবে, যার গল্প বেশী ভোট পাবে সে হবে বিজয়ী। দেখা যাক কার গল্পের জয় হয়।
তরুণী রাত্তিরে চিন্তাভাবনা করলেন। কী গল্প লেখা যায়? কী নিয়ে? যেটা হবে ভৌতিক গল্প কিন্তু সবার চেয়ে আলাদা। ভাবতে ভাবতে ঘুমালেন। এবং দুঃস্বপ্ন দেখলেন। দুঃস্বপ্নটার বর্ণনা এমন:
‘ঝড়ো বৃষ্টির রাত, মরদেহে প্রাণ সঞ্চার হয়েছে, জেগে উঠেছে অশুভ কিছু, বিশাল তার দেহ, হলুদ ঘোলাটে চোখ, বীভৎস চেহারা নিয়ে ধেয়ে আসছে এক দানব। তার গন্তব্য এক নিরীহ সায়েন্টিস্ট। দানবটা তাকে ছুঁতে চায়।’
তরুণী ঘুম থেকে উঠেই লিখলেন একটা গল্প। বাকি তিনজন বিনাবাক্য ব্যয়েই স্বীকার করে নিলেন এই গল্প সেরা এবং জয়ী। তার তিন বৎসর পর এই গল্পটা প্রথমবার একটা উপন্যাস আকারে আসে। আর জন্ম নেয় বিশ্বসাহিত্যের প্রথম সায়েন্স ফিকশন। এবং তর্কসাপেক্ষে বিশ্বসাহিত্যের দ্বিতীয় বিখ্যাত হরর।
এক রাত্তিরের ঘরোয়া আড্ডায় বাজি জিতে বিশ্বসাহিত্য রাঙিয়ে দিয়েছিলেন যে তরুণী, আজ তাঁর জন্মদিন। মেরি শেলী। যখন তিনি 'ফ্রাংকেনস্টাইন' লিখেছেন, তাঁর বয়স তখন মাত্র আঠার। ওই রাতে বাজিতে যাদের হারিয়েছিলেন তিনি, তারা তিনজন ছিলেন যথাক্রমে পার্সি বিশি শেলী, কবি লর্ড বায়রন ও চিকিৎসক জন পলিডোরি।

Rafsan Mahmud
댓글 삭제
이 댓글을 삭제하시겠습니까?