আমাদের পূর্বপুরুষরা কৃষক ছিলেন, শ্রমিক ছিলেন। থাকতেন মাটির কাঁচা ঘরে। অর্থাভাবে-অন্নাভাবে কখনও-সখনও উপোসও করতেন। পরতেন মলিন পোশাকপরিচ্ছদ। আমাদের বাবারা চাইলেন আমরাও যেন পূর্বসূরিদের মতো শ্রমিক না হই, আমাদেরকেও যেন মাটির ঘরে থাকতে না হয়, আমরা যেন পাকা ঘরে থাকি, যেন পেট পুরে তিনবেলা খেতে পাই। বাবারা আমাদেরকে নিয়ে বাসে-ট্রেনে-লঞ্চে করে গ্রাম ছাড়লেন, মফস্বলে এনে পড়াশোনা করালেন, টিনশেড ঘরে রাখলেন। আমরা পড়াশোনা করলাম, মফস্বল ছাড়লাম, উচ্চশিক্ষার্থে মহানগরে এলাম, স্নাতক হলাম, স্নাতকোত্তর হলাম; পূর্বপুরুষদের বিশাল বাড়ি ছেড়ে অ্যাপার্টমেন্ট নামক কংক্রিটের বস্তিতে উঠলাম, কায়িক পরিশ্রম থেকে মুক্ত হলাম, বুদ্ধিবৃত্তিক কাজকর্ম (আসলে কেরানিগিরি) করে জীবিকা নির্বাহ করা শুরু করলাম, পোশাকে-আশাকে ফিরিঙ্গিদের মতো ফিটফাট হলাম, শরীরে-মনে আভিজাত্য এল। আমাদের পা আক্ষরিক অর্থেই আর মাটিতে পড়ল না, গা আর বৃষ্টিতে ভিজল না। আমরা মাটির ঊর্ধ্বে উঠে গেলাম, বৃষ্টির ঊর্ধ্বে চলে গেলাম। সর্বোচ্চ স্মৃতিশক্তি প্রয়োগ করেও আমরা মনে করতে পারি না— আমরা সর্বশেষ কবে মাটিতে হেঁটেছিলাম, বৃষ্টিতে ভিজেছিলাম বা ঘাসের ছোঁয়া পেয়েছিলাম। এমনকি, নিজের কেনা অ্যাপার্টমেন্টের ছাদের চাবিও আমাদের কাছে থাকছে না, আমাদের মিলছে না নিজের মালিকানাধীন ভবনেরও ছাদে যাওয়ার অবাধ সুযোগ। মানুষ চাঁদে যাচ্ছে, আমরা পারছি না ছাদেও যেতে।

Ziaul Haque
تبصرہ حذف کریں۔
کیا آپ واقعی اس تبصرہ کو حذف کرنا چاہتے ہیں؟
Fahim Ahmed
تبصرہ حذف کریں۔
کیا آپ واقعی اس تبصرہ کو حذف کرنا چاہتے ہیں؟
Ayesha Rahman
تبصرہ حذف کریں۔
کیا آپ واقعی اس تبصرہ کو حذف کرنا چاہتے ہیں؟